যেতে হবে

তবু চলে যেতে হবে ছেড়ে অঘ্রাণের কোনো এক বিষণ্ণ দ্বিপ্রহরে ছেড়ে যেতে হবে এই ঘাস-জমি, ধান-গোলা, খেত, ঘাট, খামার দু ফোঁটা চোখের জল বরাদ্দ থাকবে শুধু আমার। ঝরে যাব ঘাসের আঁধারে এক ফোঁটা শিশিরের মতো আমার শরীর কুড়ে কুড়ে খাবে অগণিত বলিভুক্‌ যতো এক প্রাচিন অশ্বত্থের ছায়াতে শুয়ে আমি একা - নির্বেদ হেমন্তের মলয় সমীর...

বেয়াদব আওয়াজ

পাথর দিয়ে যত্ন করে বাঁধিয়েছি মনের ঘাট রূপকথারা আসে না আর আজ কান্না? সে তো মেয়েদের শোভা পায় - এমনই শিখিয়েছে আমায় এই বেশ্যা সমাজ। সামনে দিয়ে সোজা হেঁটে চলে গেলাম যেন আমি “চির উন্নত শির”, যেন আমি মিলিটারি “বুটের পরে বুট” আমার উগ্র সুগন্ধে স্টেশানের বাতাস মদির। "ক্যান ইউ প্লীজ হেল্প মী? আই নীড...

মেখলা তুমি

মেখলা, তুমি একলা বিকেলে আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজেছিলে মনে পড়ে? মেখলা, তোমার হাতের নরমে আমার হাতকে আশ্রয় দিয়েছিলে যত্ন করে মেখলা, তুমি অষ্টমীতে নীল শাড়িতে আকাশ হয়েছিলে মনে আছে? মেখলা, তোমার কস্তুরী মৃগী গন্ধ পেতে আসতে চেয়েছিলাম আরো কাছে মেখলা, তুমি স্নানশেষে খোলা চুলে কার অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলে জানালাতে মেখলা, সেই বৃষ্টিস্নাতা মিষ্টি তোমায় লুকিয়ে দেখেছিলাম...

ভুতদেখা

সন্ধ্যার অন্ধকারে বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টানছিলাম আর হিসেব করছিলাম, বোনাসের টাকা দিয়ে গাড়িটা বদলানো যায় কিনা। হঠাত ভুত দেখলাম, হ্যাঁ, ভুত, আমারি ভুত ভুত মানে তো অতীত, আমার অতীত - বিশ বছর আগের আমি, ওর হাতেও সিগারেট আমার হাতে ক্লাসিক মাইল্ড, ওর হাতে সস্তা কি একটা, নাম ভুলে গেছি ভুত দেখে ভয় পেতে হয়, তাই...

আমার তুমি

তুমি দুর আকাশে ঝিনুক হয়ে ফোটো আমি ঘুম চোখেতে বিভোর হয়ে দেখি তুমি শিউলি ফুলে শিশির হয়ে ভেজো আমি তোমার গন্ধ শরীর জুড়ে মাখি তুমি ঢেউ হয়ে এসে আছড়ে গায়ে পড়ো আমি নিষ্ঠুর সেই আঘাত বুকে পাই তুমি ভিজিয়ে দিয়ে আবার ফিরে যাও আমার একলা বিকেলে তোমার প্রতিক্ষাই তুমি আকাশ জুড়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরো আমি...

অহল্যাকে

আজ হেমন্ত। মহানন্দা নদীর ঘাটে ফুটে আছে ঘেঁটু ফুল, অনাদৃতা; একটা তিতির পাখি তার অস্থির ডানায় পড়ন্ত বিকেলের বিষণ্ণ কমলা মেখে পথ ভুল, অতন্দ্রিতা; নদীর জলে পা ডুবিয়ে একলা বসে, মেখলা, তোমার কোমর ছড়ানো চুল। আজ তুমি বিবাহিতা; আজ তোমার আয়ত দুটি চোখ কান্না ধুধুল। ওগো অবহেলিতা, তোমার চোখের ভাষা বোঝেনি যে জন তোমাতে তবু...

তোমায় আরও একবার

শ্যাওলার গন্ধের মত নিস্তেজ এক দুপুরবেলা রূপনারাণের এক নির্জন বালুচরে একটা ছাতিম গাছের ছায়ায় তোমার কোলখানা মাথার বালিশ করেছি; তোমার ভেজা শরীরের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ভিজেছি, সে বহুকাল হল। . তারপর বহুবার ওই বালুচর, এই বালুচর বিধ্বংসী বন্যায় ভেসেছে; সেই নিস্তেজ শ্যাওলা গন্ধা দুপুরগুলো আজ নারকীয় আক্রোশে বিষ নিশ্বাস ফেলে;; আজ প্রেতের মত আমার খুদিত শীতল...

হতচ্ছাড়া

Office যাওয়ার আগে নিত্যনৈমিত্তিক একটি ঘটনাকে এই মজার ছড়াটায় একটু ধরার চেষ্টা করেছি। আপনাদের সকলের জীবনেই এটি কখনো না কখনো ঘটেছে। তাই আশা করি relate করতে পারবেন। মোবাইল মহাশয় বড়ই সদাশয়, যখন দরকার হয়, ডাকলেই দিয়ে দেয় সাড়া মানিব্যাগ হতচ্ছাড়া, যদি করেছ কাছছাড়া, লুকোচুরি খেলে তবে তারা অফিস যাওয়ার কাল, সক্কাল সক্কাল, হন্যে হয়ে তারে...

বিশ্রাম

যত দূরে যাই সমুদ্রের গুরু গুরু ধ্বনি শুনতে পাই সব কাজ সারা হলে, সব কথা বলা হলে যাবো শুতে ওই জলধিতে সেখানেতে তুমি আমি নাই পাপপুণ্য, বিচার, বিরোধ নাই; নাই কোনো মানবিক বোধ আছে শুধু, শান্তিতে শোবার চারপাই সেইখানে আকাশ মেঘমুক্ত, বৃষ্টিবিহীন সেইখানে মধুমাস বারো মাস; সকল রাত্রি আর দিন আধো-আলো, আধো-ছায়া, আলেয়ার মতো সেখানে...